Header Ads

অর্পার ভালবাসা

-এই যে মি: এরপর থেকে অামার দিকে
এমন করে
তাকিঁয়ে থাকতে দেখলে,
কিন্তু চোখ
দুটো
তুলে নেব।
এই বলে দিলাম,,,,,,,
এক
নিশ্বাসে
কথাগুলো বলে থামল।
-আমি হৃদয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্নাস ২য় বর্ষে পড়ি ।
-আর যে
উপরের কথাগুলো বলল সে হল -'অর্পা'।
-আমাদের
পাশের বাসায় থাকে,একই ভার্সিটিতে পড়ি,কিন্তু অর্পা অর্নাস ১ম
বর্ষে পড়ে।তবে
আমার জুনিয়র হলে কি হবে???
-আমার
সাথে এমন
ব্যবহার করে যেন আমার সাথেই
পড়ে।
'অর্পা' কে
দেখলে কেমন যেন এক অদ্ভুত
ভালোলাগা কাজ
করে।
-ওর কাছে গেলে মনে হয় আমার
চারপাশ
স্তব্ধ হয়ে গিয়ে তার মাঝে বিলিন
হয়ে যায়।
.
-যাই হোক, প্রতিদিনের মত আজও
বন্ধুদের সাথে
শেখদী স্কুলের কাছে নিশু মামার
দোকানে বসে আড্ডা
দিতেছিলাম।
-বরাবরের মত
'অর্পা' টং দোকানের পাশ দিয়ে
হেঁটে যাচ্ছিল।
-আর
আমি এক মুগ্ধতা নিয়ে তার দিকে
চেয়েছিলাম।
-প্রতিদিন কিছু না বললেও, আজ আমার
সামনে এসে
ধমকের সাথে ওপরের কথাগুলো বলল।
-আমি শুধু মাথা নাড়ালাম।
.
-'অর্পা চোঁখ দুটো বড় বড় করে বলল,মুখ
দিয়ে
কথা বের হয় না???
বোবা হতে ইচ্ছা
করে?
-কাল
থেকে কিন্তু মুখে টেপ মেরে দিব।
-আমি একটু ভয় পেয়ে বললাম,,,,
আমার
বোবা হতে
ইচ্ছা করে না। তোমার সাথে কথা
বলতে খুব ইচ্ছা
করে।
-যাও কাল থেকে আর এমন করে
তাকাবো
না।
.
-"অর্পা"
মনে হয় অন্য কিছু একটা ভেবে
ছিল।
-তাই
একটু মনমরা হয়ে বলল হুম, মনে থাকে
যেন।
-বলেই হাঁটতে শুরু করল।
.
-এর মধ্যে বন্ধুরা আমাকে বলতে শুরু
করল,বলেছিলাম না
-এই মেয়ের সাথে
কখনো
প্রেম করতে পারবিনা।
-তোর মত এমন কত
ছেলে গেল আর আসল।
-আমি বললাম,
দেখা যাবে সময় হলে।
.
-আসলে আগে 'অর্পা' এত সাহস দেখাতে
পারতনা।
-আমরা এই মহল্লায় এসেছি ৬ মাস হল।
প্রথম
দেখাতেই 'অর্পা' কে ভালো লেগে
যায়।
-'অর্পা'
আমাদের বাসায় এসেছিল তার
মায়ের সাথে।
-সে দিন
তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল।
-আমি আবার মনের
কথা পুষে রাখতে পারিনা।
তাই হঠাৎ
করে তার সামনে গিয়ে বলেছিলাম।
-"আমি তোমাকে
ভালোবাসি"।
-এইটুকু বলেই এক দৌড়ে বাসায় চলে এসে
ছিলাম।
এরপর থেকে তার সাথে দেখা হত কম।
-মহল্লার
কিছু ছেলে যারা আমার সাথে পড়ে।
-তাদের সাথে
ভালো একটা বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক হয়ে
গিয়েছে।
-যেদিন বন্ধুদের বললাম জানিস,,,,
-আমি
না অর্পা কে
ভালোবাসার কথা বলে দিয়েছি।
-বন্ধুরা সব আমাকে জানি কেমন করে
দেখতে
লাগলো!!!!!!!
-মনে হয়! আমি ভিন্ন গ্রহের
মানুষ।
.
-আমি বললাম,এমন করে কি দেখছিস???
-এক বন্ধু বলল,
তোর কোন গালই তো লাল
দেখাচ্ছে না।
-আমি বললাম, আরে আজব তো!
গাল লাল
হবে
কেন???
-এরপর যা বলল বন্ধুরা, তা শুনে আমার
হাত আপনা আপনি
গালে চলে গেল।
-আর ভাবতে
থাকলাম।ভাগ্যিস
সে দিন দৌড় দিয়ে চলে আসছিলাম।
-এখন শুধু তার
দিকে চেয়ে থাকতাম।
-কিন্তু এটাও
'অর্পা' না করে
দিয়েছে।
.........!
.........!
-আমি এখন অার 'অর্পা '
'কে' পাওা দেই
না।
-অকে
দেখলে আমি স্বাভাবিক ভাবেই
হেঁটে যাই।
-এমন
ভাব করি যেন তাকে আমি দেখিনি।
-যাই হোক,
আজ লন্ডন হেয়ার সেলুনে গিয়ে বরাবরের
মত স্টাইলে চুল না কাটিয়ে অন্যরকম
স্টাইলে চুল
কাটালাম,,
- কেমন যেন লাগতেছে।
-মনের দিক
থেকে মোটেও ভালো লাগছে না।
-তারপরও
এখনকার মেয়েদের তো এই স্টাইলই
ভালোলাগে।
-কলেজে গিয়ে এক জায়গার বসে
বন্ধুদের জন্য
অপেক্ষা করতেছি।
-এমন সময় দেখলাম -
'অর্পা' ও
তার বান্ধবিরা এ দিক দিয়ে হেঁটে
যাচ্ছে।
-আমি এমন ভাব করলাম,,,,
যেন তাদের
দেখিই নি।
-আমার পাশ দিয়ে যাওয়া সময় বলতে শুরু
করল - ছিঃ, ছিঃ,
কি চুলের স্টাইল,দেখেছিস কিরকম
খাড়া খাড়া চুল, একদম ঘোড়ার মত দেখাচ্ছে।
-আমি জানি এই চুলের স্টাইলে
আমাকে ভালোই
লাগতাছে।
-কারন আমার বন্ধুদেরকে
বলেছি,
কিরে
কেমন লাগছে????
-তারা বলল,পুরাই জোশ মামা।
বন্ধুদের
কথাও বিশ্বাস
করলাম হইলে না,,,,,,,,,
-যদি এক জুনিয়র মেয়ে নুসরাত এসে
না বলত,
-ভাইয়া
আপনায় চুলের স্টাইলটা অনেক সুন্দর।
-আপনাকে
আমার খুব ভালো লাগে।
-আমাকে না?? চুলের স্টাইলটাকে? .
-একটু লজ্জার স্বরে বলল,
না মানে...
চুলের
স্টাইলটাকে।
.
-আমি বললাম,ও আচ্ছা তাই বল!
.
-কিন্তু 'অর্পা' কেন এমন করেছে তা আর
জানার চেষ্টা
করছিনা।
-পরের দিন,
যে ছেলেটি প্রচন্ড গরমের মধ্যেও ফুল
হাতা
শার্টের হাতের কবজি পর্যন্ত লাগিয়ে
রাখতো।
জিন্সের পেন্ট কখনো পড়তো না,
অলটাইম
সাধারন জুতা পড়ে ঘুরে বেড়াতো।
-আজ
তাকে
দেখে শুধু তার বন্ধুরা আর 'অর্পা'
অবাক
নয়।
-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান সহ অন্যান্য বিভাগের
সবাই অবাক।
-কারন, আজ সে ফুল হাতা শার্টের
হাতা, কুনুই পর্যন্ত
কুচিয়ে রেখেছে।
-মাঝে মাঝে একটু
ছেড়াঁঁ
এইরকম জিন্স পেন্ট পড়ে এসেছে ।
- আর
পায়ে
কনভার্স পড়ে এসেছে।
-সে আর কেউ নয়,,,,,
-আমি
নিজেই।
'অর্পা' কে
দেখিয়ে দেখিয়ে
'অর্পার' ক্লাসের
একটা
মেয়ে তানিসার সাথে হেসে হেসে কথা বলছিলাম ।
-'অর্পা'
আমার
দিকে কেমন করে যেন তাকাল।
- আমি
তেমন একটা
কেয়ার করি না,
-এমন একটা ভাব ধরলাম।
-এভাবেই কেটে গেল প্রায় কয়েকটা
দিন ।
-একদিন হঠাৎ আমি একটা মেয়ের সাথে কথা
বলছিলাম।
-এমন সময়
দেখি 'অর্পা' আমার সামনে দাঁড়িয়ে
আছে।
-আমি বললাম, কিছু বলবে?
-অর্পা তখন বলল, আমি আবার কি বলব?
-আমি আবার তখন অর্পাকে সাথে সাথে বলেছি তুমি কি জেলাস ফিল করছো?
একটু নরম
স্বরেই বললাম।
-আমি জেলাস ফিল করতে যাবো
কোন
দুঃখে????
আমার কি খেয়ে দেয়ে আর
কোন কাজ
নাই।
এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে।
ধ্যাত।
অর্পা তখন রেগে উচ্চস্বরেই কথাগুলো বলল।
-আর বলেই হনহন
করে
চলে গেল।
.
আসলে, সুন্দর মেয়েগুলো এমনই।
-যখন
তাকে
পাওা দিবেন না,
তার চেয়ে কম সুন্দর
মেয়েদের
সাথে ভালোভাবে কথা বলবেন,
-তখন
সে জেলাস
ফিল করবে।
-আর আমি তো 'অর্পা""
কে
প্রেম
নিবেদন করেছিলাম,,,,,,,
-তার আরও বেশি
জেলাস হওয়ার
কথা।
-বরাবরের মত,
আজ আগের মত স্টাইল করে
কলেজে যাবার জন্য বাসা থেকে বের
হয়েছি।
-তখন দেখলাম হাতে চিরুনি নিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে।
-আমি
যখন ভাব ধরে সামনে দিকে এগুচ্ছি ।
-তখনি
'অর্পা' দৌড়ে এসে আমার কলার ধরে
বলল,
."ও মাই গড আমি তখনিই বলতেছি'
-ওই তুই
নিজেকে কি মনে করিস, হ্যাঁ??
-আমি উওর না দিয়ে বললাম,
কি
হচ্ছেটা কি?
-আমার কলার
ছাড়।
মানুষ দেখলে কি ভাববে?
-এখন মানুষে দেখলেই দোষ???
-যখন জুনিয়র
মেয়েগুলোর সাথে আড্ডা দিস,
তাদের ফুচকা
খাইয়ে দিস।
-তখন কিছু না।
-আমি কিছু বললাম না।
-'অর্পা' কলারটা ছেড়ে দিয়ে
বলল,
-এরপর থেকে
যেন ওই মেয়েদের সাথে না দেখি। .
-আমি নরম স্বরে বললাম আর কিছু
বলবে? .
-হুম,
-বল,
-সোজা হয়ে দাড়াও!!!
-আমি সোজা হয়ে দাড়াঁলাম।
-'অর্পা' আমার পায়ের উপর দাঁড়িয়ে
তার হাতের চিরুনি
দিয়ে আমার চুলগুলোকে ডান দিকে
সিথি করে দিল।
-অর্পাকে এত কাছ থেকে আগে কখনো
দেখিনি।
-আমি
অপলোক সৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে
আছি.
-এই যে মি: হৃদয় কি দেখছেন???
এমন
করে?
-আআমি...না কিছু নয়তো।
-এবার শার্টের হাতা ঠিক করেন
মি:
হৃদয় সাহেব ।
-আমি মাথা নিচু করে
বললাম,
পারিনা তো।
-তখন অর্পা আমার শার্টের হাতা ঠিক করতে করতে
বলল।
-আগে
করতেন কিভাবে???
-আমি আবার সেই আগের হৃদয় হয়ে
গেছি।
-আমি
কিছু টা অস্পষ্ট ভাষায় বললাম,
-তুমি
পাশে থাকলে এই
সব পারি না।
-কিহ??
-কিছু না।
-এখন আমার সাথে চল।
-কি বন্ধুদের কাছে নিয়ে যাবা তাই
তো ???
-আমি কিছু না বলে, 'অর্পাকে' হাত ধরে
রিক্সায়
উঠালাম।
.
-রিক্সায় হাত ধরে থাকলাম।
-অর্পা হয়তো
কিছুটা লজ্জা
পাচ্ছে।
-তাই সে মাথা নিঁচু করো
আছে।
-শেখদী স্কুলের নিশু মামার দোকানের সামনে গিয়ে রিক্সা
ওয়ালা মামাকে
বেল দিতে বললাম।
-বন্ধুরা আমাকে আর অর্পাকে
একসাথে দেখে সবাই হা করে
তাকিয়ে আছে ।
-দেখলাম "অর্পা"
তাদের দিকে
তাঁকিয়ে মুচকি মুচকি
হাঁসতেছে।
-আমি রিক্সাওয়ালা
মামাকে সামনের দিকে
চালাতে বললাম।
-আমি যখন আমার ভাবনার কল্পনা গুলোর
আর
এখনকার
অবস্থার সাথে মিল খুজে বের করার
ব্যার্থ চেষ্টায়
মগ্ন।
.
-তখনি ঘটল,
আমার হৃদয়ের কক্ষটাকে ছিন্ন-
বিছিন্ন করার
ঘটনা।
-হ্যাঁ,
-"অর্পা"
আমার কাঁধে মাথা
রেখেছে।
- বিখ্যাত
কবিদের লেখা থেকে
জেনেছি,
-প্রিয় মানুষটি যখন
কাঁধে মাথা রাখে কেমন লাগে তার,
সেই বিষয়ের
ব্যাখা।
-কিন্ত আমার মনে হচ্ছে এই
মনের ভাব
কোন কিছুর মাধ্যমে প্রকাশ করা
যাবে না।
-কি যে,
ভালোলাগা আর প্রশান্তি বিরাজ
করছে
তা বলে
বুঝানোর নয়।
.
-আমি আলতো করে আমার ডান হাত
দিয়ে জড়িয়ে
ধরলাম "অর্পাকে।
.
-"অর্পা" মন্ত-মুগ্ধ করা সেই চাহনি দিয়ে
কিছুক্ষণ
তাঁকিয়ে থেকে এবার কাঁধে নয়, বুকে
মাথা রাখল।
-আমার মনে হল - তার দুঃসময়ের সকল
প্রতিকূলের
একমাত্র আশ্রয়স্থল সে খুঁজে পেয়েছে।
খুঁজে পেয়েছে তার সব মান-অভিমান,
ব্যক্ত-
অব্যক্ত কথা বুঝে নেওয়ার মানুষ।
-আমি আর কিছু বললাম না।
রিক্সা ছুটে
চলেছে তার
আপন গতিতে।
-গতকাল এই পরিবেশটাই
রুক্ষ ছিল।
আজ তা মনে হচ্ছে সবুজে পরিপূর্ণ।
শহরের কোলাহল ভেদ করে রিক্সা ছুটে
চলেছে গ্রামের সেই আকা-বাঁকা
মেঠো পথ
ধরে।
আর
দুজন মানব-মানবীর না বলা
সেই
ভালোবাসার অনুভূতি যেন ছড়িয়ে
পড়ছে, রাস্তার
দুইপাশে।
-----------------------*★★★*-------------------------
,আসলে সত্যিকারের ভালবাসা গুলো ঠিক এমন ভাবেই প্রকাশ হয়,
,বেঁচে থাকুক এমন হাজারো ভালবাসা,
,বেচেঁ থাকুক হৃদয় আর অর্পার ভালবাসা,
____________সমাপ্ত_____________
গল্পের নাম-অজানা সেই অনুভূতি
[বিদ্র: গল্পটা কাল্পনিক,সামান্য একটু সত্যি
ভুল ক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।]
উৎর্সগ-হৃদি আহমেদ
লেখক-হৃদয় আহমেদ এ এইস

No comments

Powered by Blogger.