Header Ads

রহস্য

ক্লায়েন্টের বাসায় যাচ্ছি। আমি যে শহরে থাকি সেই শহরের পাশেই গ্রামে বাসা। সর্বোচ্চ ৮-৯ কি.মি. দূরে হবে। গ্রামে ভালোই শীত হবে হয়তো । শহরে এত্ত গরম আর গ্রামের দিকে দেখি সন্ধ্যাবেলায়ই কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। হালকা শীত শীতও লাগছে। ব্যাগ থেকে চাদরটা বের করে গায়ে জড়ালাম। ৩ চাকার ট্রেনের মতো ২ দিকে সীটের ব্যাটারিচালিত যে অটোরিকশা আছে ওগুলোতে উঠেছি। গাড়িতে গানের ব্যবস্থাও আছে। আমি একাই যাত্রী। চালক কে গান দিতে বললাম। গান চলছে হাবিবের "ধীরে ধীরে যাও না সময় আরও ধীরে বও"। পরিবেশের সাথে একদম খাপ খেয়ে গেছে। চালকের রুচিশীলতার প্রশংসা করতে হয়।
প্রায় গন্তব্যস্থলে এসে পড়ছি। ড্রাইভার বললো আর মিনিট ২ লাগবে। এমন সময় গাড়ির সামনে কাঁচে লাল এক ধরণের তরল পড়লো। ড্রাইভার বিষ্ঠা ভেবে পাখিকে অকথ্য ভাষায় গালি দিচ্ছে। আমি দ্রুত পেছনে উপরে তাকিয়ে পাখিটাকে দেখতে চাইলাম। কিন্তু চোখে পড়লো সুবিশাল এক বট গাছ। উপরে ডাল-পালাগুলো এতটাই ঘন যে নিচ থেকে উপরে ডালের ভেতর কোন পাখি আছে তা বোঝা অসম্ভব। মনে হয় একটা মানুষও যদি ওখানে ঘর বানিয়ে থাকে তাহলে দেখার উপায় নেই। বটগাছ নিয়ে এলোমেলো ভাবতে ভাবতেই ক্লায়েন্টের বাসায় পৌছে গেলাম।
বিশাল বড় বাড়ি, সুদর্শন ও। তারমানে ভালোই সম্ভ্রান্ত পরিবার। কলিংবেল বাজানোর প্রায় মিনিট দুয়েক পর এসে দরজা খুলে দিল। কাজের লোক হয়তো। সালাম দিলাম। আমার থেকে প্রাপ্ত অপ্রত্যাশিত সালামে খুশিতে গদগদ। আমাকে নিয়ে বসিয়ে আমার ক্লায়েন্টকে ডাকতে গেছে। কিছুক্ষণ পরে ক্লায়েন্ট এসে আমাকে সালাম দিল। বললো
-স্যার, ধন্যবাদ আমার বাসায় আসার জন্য। আমি খুবই মহাবিপদে আছি। আমার বিজনেস পার্টনার খুন হয়েছে। আমারও প্রাণসংকট। আশা করি আপনি আমাকে বাঁচাতে পারবেন।
-ধৈর্য ধরুন। বেশি উদ্বিগ্ন হলে আপনি সেটার সহজ সমাধানও খুঁজে পাবেন না। আর আপনি আমাকে স্যার বলে সম্বোধন করলেন। মানে সম্মান দেখালেন। আপনার বয়স ৫০ হবে আর আমার ২৫। আমি আপনার ছোট সো সম্মান এর বদলে ভালোবাসা দেখালে খুশি হবো। আমি শুভ, এটা বলেই ডাকবেন।
উনি মুচকি হাসির চেষ্টা করলেন। কিন্তু সেটাকে ঠিক হাসি বলা যায় না। বরং এভাবে বলতে পারি, উদ্বিগ্ন মুখের চিন্তার ছাপটা মুহুর্তের জন্য মুছে ফেললেন।তারপর হিমশীতল গলায় বললেন
- আপনি কি ঘটনাটা এখনি শুনবেন?
-মাঝরাতে হলে ভালো হয়।
-ওকে। (এবার আমার কথা শুনে আর মুচকি হাসলেন না। মনে হলো আরও বেশি চিন্তায় পড়ে গেলেন।)
যাই হোক তিনি প্রস্থান করার সাথে সাথে তার স্ত্রী আসলেন। উদ্বিগ্নের হার হিসেবে স্বামীর থেকে উনি কিছুটা এগিয়ে আছেন বোঝা যাচ্ছে। উনিও আমাকে সালাম দিলেন। বললেন
-ধন্যবাদ স্যার। আপনাকে আমার স্বামীর জীবন বাঁচাতেই হবে।
আমার ভেতর থেকে কথা বের করতে ইচ্ছে করছে না। তাই, তার স্বামীকে যেটা বলেছিলাম সেটাই বললাম
-ধৈর্য ধরুন। বেশি উদ্বিগ্ন হলে আপনি সেটার সহজ সমাধানও খুঁজে পাবেন না। আর আপনি আমাকে স্যার বলে সম্বোধন করলেন। মানে সম্মান দেখালেন। আপনার বয়স ৪৫ হবে হয়তো আর আমার ২৫। আমি আপনার ছোট সো সম্মান এর বদলে ভালোবাসা দেখালে খুশি হবো। আমি শুভ, এটা বলেই ডাকবেন।
ভেবেছিলাম উনিও হয়তো স্বামীর মতো রিয়্যাক্ট করবেন। কিন্তু না, উনি কেঁদে দিলেন। কেঁদে কেঁদে বললেন
-আপনাকে আমার স্বামীর জীবন বাঁচাতেই হবে।
-আমি যে কাজটা হাতে নেই সেটার জন্য নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত তাই আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টাটাই করবো।
উনি আমার কথায় কোনো রিয়্যাকশন দেখালেন না। আমাকে খাবারের দিকে ইশারা করে চলে গেলেন কাঁদতে কাঁদতে।
আমি খেতে শুরু করলাম। বাহারি সব খাবার। আমি সব বাদ দিয়ে শুধু আপেলগুলো খাচ্ছি। আপলের সাথে নিউটনের একটা সম্পর্ক আছে। আপেলের মাধ্যমেই উনি আজ এত বিখ্যাত। তাই আমি সবসময়ই বেশি বেশি আপেল খাই।
আমি ২ টুকরো মুখে দিতেই একটা মেয়ে আসলো। উনাদের মেয়ে হবে হয়তো। উনারা এখানে থাকতে না পেরে হয়তো সৌজন্যবোধ দেখাতে মেয়েকে পাঠিয়ে দিয়েছেন আমার সাথে কথা বলার জন্য। মেয়েটি এসে আমাকে সালাম দিলো না, হয়তো খাচ্ছি তাই। কিন্তু বাবা-মার মতোই বললো
-স্যার আমার বাবাকে আপনার বাঁচাতেই হবে।
আমার এবারও ভেতর থেকে নতুন কথা বের করতে ইচ্ছে করলো না। আবার বললাম
-ধৈর্য ধরুন। বেশি উদ্বিগ্ন হলে আপনি সেটার সহজ সমাধানও খুঁজে পাবেন না। আর আপনি আমাকে স্যার বলে সম্বোধন করলেন। মানে সম্মান দেখালেন। আপনার বয়স ২০-২২ হবে হয়তো আর আমার ২৫। আমি আপনার বড় সো সম্মান এর বদলে ভালোবাসা দেখালে খুশি হবো। আমি শুভ, এটা বলেই ডাকবেন।
বলেই বোকা হয়ে গেলাম। ভাবলাম উনি না জানি রেগে যায় আমার এ বেয়াদবি কথা শুনে। অতি দ্রুত সরি বললাম।
যতটা ভেবেছিলাম তার কিছুই হলো না। উনি ইজিলি নিয়েছেন নাহলে অতি চিন্তায় থাকায় বুঝেই নি। উনি আমাকে ইটস ওকে বলে ঘরে চলে গেলেন। সাথে কাজের লোককে আমার ঘর দেখাতে বলে গেলেন।

7 comments:

  1. amazing story. Thanks for sharing. https://tirtherkakkorca.blogspot.com/

    ReplyDelete
  2. This comment has been removed by the author.

    ReplyDelete
  3. Nice post. Thanks for sharing. Please visit my bangla tech blog as well. Techitunes BD bangla blog is solely dedicated to technology news, bangla tutorials and tips, bangla tech-review and software download link.

    ReplyDelete
  4. Very informative blog. Love the story. Please take some time to visit mine Wiki Tourist

    ReplyDelete
  5. Love the story, keep sharing new posts. any body love travel stories and tips, kindly visit following blog Vacilando Web
    your one stop travel destinations.

    ReplyDelete
  6. love the story. keep posting. Visit my travel blog as well Wikistravel

    ReplyDelete
  7. Nice. Please visit: mayeedahammed.blogspot.com

    ReplyDelete

Powered by Blogger.