জীবনের গল্প
ঘুমান্ত হীরাকে যেনো আরো বেশি সুন্দর লাগছে। কাঁদতে কাঁদতে চোখ- ঠোট ফুলিয়ে অবশেষে পাগলিটা ঘুমিয়ে পড়েছে। নীল ড্রেস, খোলা চুল, চোখে কাজল, কমলার কোষের মতো ঠোট, গলায় জড়ানো পাথরের মালা সব মিলিয়ে হীরাকে যেনো স্বপ্নপরীর থেকেও দারুণ লাগছে। মনে হচ্ছে এতো সুন্দর রুপবতী কোন রমণীকে জীবনের প্রথম বার দেখছি। অথচ এই হীরাই আমার সহধর্মনী।
হীরা আর আমি আজ ৬মাস পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি। ফুল শয্যার রাতে হীরার কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে একটা প্রশ্ন করেছিলাম। হীরা তোমার জীবনে কখনো কেউ ছিল??? পাগলিটা হেসে হেসে উত্তর করেছিলো, হা দুজন ছিল।
এক শালার সাথে ৩ মাস টিকেছিলো। ফাস্ট ডেটিং এ রেস্টুরেন্টে ২৬০০ বিল করলাম শালা পরদিন থেকে নাম্বার অফ করে রাখলো। আমি বেশ উচ্চস্বরে হেসে উঠলাম। জানতে চাইলাম তারপর?
আর এক শালার সাথে ৬ মাস, ৩মাস টানা একটা কিস করার জন্য হাত-পায়ে পড়তে লাগলো। একদিন সুযোগ দিলাম, ওরে শালা কিস করার ধরণ দেখেই বুঝেছি শালা পাক্কা লুচ্চা। সেইদিনই বাই বলে দিছি। ফুলশয্যার রাতে এ ভাবে নিঃসংকোচে সব কিছু স্ট্রেট বলে দিল হীরা। সেই থেকেই পাগলিটার প্রতি বিশেষ একটা ভালবাসা জন্ম নিয়েছে।
পাগলিটার হাসি -মাখা মুখে সহজ সরল প্রশ্ন ছিল।
তোমার কিছু জানতে পারি? বেশ বড় রকমের ধাক্কা লাগলো বুকে! এ ধরণের প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।
কি উত্তর দিব?? ওর মতো যে এত সহজে আমার জীবনের গল্প শেষ হয়নি। নিজেকে সামলিয়ে নিয়ে হাসি মুখে বললাম অন্য একদিন বলবো।
সেই থেকে আজ ৬মাস পর পাগলিটা আমার জীবনের গল্প শুনতে জোর করতে লাগলো।
অগত্য আমি বলতে বাধ্য হলাম, "জীবনে প্রথম মেয়ে হিসাবে তরু আমার লাইফে আসলো। সহজ সরল একটা ছেলে ছিলাম অল্পতেই তরুকে অনেক বেশি ভালবেসে ফেললাম। সেই থেকে তরু আমার শ্বাস-প্রশ্বাস।
তবে বেশ বলে দিলাম ওকে।
ও চলে যাবার পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেললাম।
হাত কাটা, রাত জাগা, গাজা খাওয়া হয়ে গেলো একান্ত সাথি। পথে পথে ঘুরে বেড়ানো, বড় বড় চুল দাড়িতে নিজেকে বদ্ধ উন্মত পাগল লাগতো। তারপর একদিন শেষ-অবধি বিষ খেয়ে ফেললাম। আল্লাহর ইচ্ছাই না মরে এখনো বেচে আছি।
হীরা এই পর্যন্ত শুনে আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেকটা কেঁদেছিল। কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে আমার কোলেই ঘুমিয়ে পড়েছে। আমি ঘুমান্ত হীরাকে দেখছি অবাক চোখে।
No comments