Header Ads

ভাইয়া,আনিতা আপু এসেছে


> মৃদু বাতাসের মাঝে বেলকুনিতে বসে বসে গিটারে টুং টাং আওয়াজ তোলার চেষ্টা করছি। দুপুরে বেলকুনিতে বসে বসে গিটার বাজানো এখন একটা অভ্যাসে পরিনত হয়েছে। তবে এই অভ্যাসটার পিছনে একটা কারন আছে। সেটা পরে বলছি। খুব ঠান্ডা মাথায়-ই গিটারে আওয়াজ তুলছিলাম। কিন্তু মারিয়ার (আমার ছোট বোন) ডাকে ঠান্ডা মাথাটা আবার গরম হয়ে গেল। আবার অনেকটা আশ্চর্যও হয়ে গেলাম। আনিতা এই ভরদুপুরে কেন এসেছে? ওর সাথে তো এখন আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই! তাহলে কেন এসেছে? ভিবিন্ন চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগলো।
আসলে আনিতা নামটা শুনলেই নিজেকে অনেক অসহায় মনে হয়। কখনও কখনও নিজের উপর এতটাই রেগে যাই যে,নিজেকেই শেষ করে ফেলতে ইচ্ছে হয়।
অতঃপর গিটারটা রেখে ঘরের মধ্যে চলে আসলাম। এসে দেখি আনিতা সোফার উপর বসে আছে। আমাকে দেখে উঠে দাড়ালো। আমি সোফায় গিয়ে বসে পরেছি।
> কেমন আছো?
> আনিতার কথায় অনেকটা রাগ হচ্ছে। সবকিছু শেষ করে দিয়ে এখন আবার জিজ্ঞেস করছে,- কেমন আছো?কেন ও কি জানেনা আমি কেমন থাকতে পারি? নাকি সব ভুলে গেছে? রাগটাকে চেপে রেখে বললাম,- ভাল আছি, তুমি?
> হ্যাঁ ভাল।
আজকে খুব ইচ্ছে করছে ওকে অনেকগুলা কথা শুনিয়ে দেই। কিন্তু কেনই বা যেন সেটা পারছি না। ওর প্রতি দুর্বলতাটা কিছুতেই কাটাতে পারছি না।
> কি হল চুপ করে আছো কেন?
> আজকে ওর কথাগুলো কেমন অন্যরকম লাগছে। মনে হয় খুব অধিকার খাটাতে চাইছে। তারপর আমি বললাম,- হুমম.....বল!
> এই নাও বলে একটা কার্ড আমার দিকে এগিয়ে দিলো।
> আমি অনেকটা আশ্চর্য হয়ে জিজ্ঞেস করলাম,- কিসের কার্ড?
> আমার বিয়ের।
কথাটা শুনে মাথার উপর আকাশ ভেঙে পরার অবস্থা। তারপরও নিজেকে সামলে কার্ডটা হাতে নিলাম।
> আচ্ছা এখন তাহলে আমি আসি। আমার আরও কয়েক জায়গায় যেতে হবে।
তারপর আনিতা চলে গেল। কেন জানিনা খুব কষ্ট হচ্ছে। ওর সাথে তো আমার আর কোনো সম্পর্ক নেই তারপরও আমার এরকম মনে হচ্ছে কেন?
আনিতা চলে যাচ্ছে আর আমি নির্বাক দৃষ্টিতে ওর চলে যাওয়া দেখছি।
এই আনিতা কোনো এক সময় আমাকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারতো না। আর আজকে সে আমাকে নিজের বিয়ের কার্ড দিয়ে গেছে। আসলে সময়টা বড় অদ্ভুত। কখন যে কার পক্ষে চলতে থাকে বোঝাই কঠিন হয়ে যায়।
আনিতার সাথে যখন আমার পরিচয় হয় তখন আমি অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। কোনো এক বিকেলে সূর্যের পরন্ত আলোয় ছাদে বসে বসে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলাম।
কিছুক্ষন পর পাশের বিল্ডিং এর ছাদের উপর তাকাতেই হঠাৎ চোখ আটকে যায় ছাদের এক কোনে দাড়িয়ে থাকা একটা মেয়ের দিকে। মেয়েটা ছাদের ওপাশে দাড়িয়ে আছে। তাই পিছন দিকটা দেখা যাচ্ছে। তবে মেয়েটাকে দেখে অনেক অচেনা লাগছে। এর আগে কখনও দেখিনি। মেয়েটার খোলা চুলগুলো বাতাসে খেলা করছে। একটুপর মুখটা এদিকে ঘুরাতেই আমি অবাক! এ কি দেখছি আমি। এত সুন্দর চেহারা! চোখে কাজল দেয়া। চোখের দিকে তাকাতেই চোখে চোখ পরে যায়।
তারপর সব বন্ধুরা চলে যায়। আমি ছাদে বসে থাকি। কিছুক্ষন পর মেয়েটাও নিচে চলে যায়। সন্ধ্যা নেমে আসছে। তাই আমি নিচে চলে আসলাম।
এই প্রথমবার এত সুন্দর মায়াবী চেহারা দেখেছি। মেয়েটার চোখগুলোর দিকে তাকাতেই কি রকম একটা নেশা ধরে গেছে। মনে হচ্ছিল ঐ চোখের তাকানিতে আমাকে অজস্র বুলেটে ক্ষত বিক্ষত করছিল।
নিজের রুমে বসে এরকম অজস্র ভাবনা মাথায় ঘুরপাক খেতে লাগলো।
আমি মনে হয় প্রথম দেখাতেই ঐ মায়াপরীর প্রেমে পরে গেছি। সেদিন আর বাসা থেকে বের হইনি। পুরো রাত জুড়ে শুধু ঐ মায়াপরীকে নিয়ে স্বপ্নপুরীতে হাতড়ে গেছি।
রাতে অনেক দেরী করে ঘুমানোর কারনে উঠতে উঠতে প্রায় সকাল ১১টা বেজে গেছে। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে একটু বাহিরে বের হলাম। আজকে আর ভার্সিটিতে যাইনি। বাসার রাস্তা ধরে সামনে হাঁটছিলাম। এমন সময় রাস্তার ওপাশ দিয়ে সেই মেয়েটাকে দেখলাম রিক্সায় করে আসছে। আমি পিছু পিছু চলে এসেছি। রিক্সাটা বাসার সামনে গিয়ে থামলো। তখন বুঝতে পারলাম মেয়েটারা মনে হয় এই বাসায় নতুন উঠেছে। তারপর আমি চলে এসেছি। বিকালে বেলকুনিতে বসে বসে ফেসবুক চালাচ্ছি এমন সময় সেই অচেনা মেয়েটাকে দেখলাম আমার বোন মারিয়ার সাথে বাসার সামনে হাঁটছে। মনে হয় মারিয়ার সাথে পরিচয় হয়েছে। যাক,তাহলে মারিয়ার কাছেই সব জানা যাবে।
রাতে বসে বসে ল্যাপটপে গান শুনছি এমন সময় মারিয়া এসে ডাক দিলো,-
> ভাইয়া ডাকছিলি?
> মারিয়ার ডাকে আমি ল্যাপটপের থেকে চোখ সরিয়ে বললাম,- হ্যাঁ, তোর সাথে কিছু কথা আছে।
> হ্যাঁ বল!
> মারিয়ার আর আমার বয়সের তেমন একটা ব্যাবধান না। আমি মারিয়ার থেকে দুই বছরের বড়। ছোটবেলা থেকেই আমরা অনেক ফ্রি। সব কথা মন খুলে বলি। তাই তেমন একটা দ্বিধা না করে মারিয়ার কাছে জিজ্ঞেস করলাম,- আচ্ছা তোর সাথে সকালে যে মেয়েটাকে দেখলাম সে কে?
> কোন মেয়েটা, যার সাথে বাসার সামনে হাঁটছিলাম সেই মেয়েটা?
> হুমমম....
> ওওও,,,ও তো আনিতা আপু। দুইদিন হল পাশের বিল্ডিং এ ভারাটিয়া এসেছে। অনেক ভাল, আপুটা। আমার সাথে খুব ভাল করে কথা বলে।
কিছুটা সন্দেহজনক ভাবে আমার দিকে তাকিয়ে মারিয়া হঠাৎ বলল, আচ্ছা কি হয়েছে বল তো, ভাইয়া?
> কিছু না,তুই এখন যা।
তারপর মারিয়া চলে গেল।
এখন আনিতার সাথে পরিচিত হওয়ার একমাত্র মাধ্যম হল মারিয়া। ওকেই এখন ধরতে হবে। পরেরদিন আমি মারিয়াকে সব খুলে বললাম। আমি ওকে বললাম আনিতার সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দিতে। ও রাজি হয়ে গেল। বোন যদি এমন না হয় তাহলে কি চলে....?
যাইহোক, বিকেলে আমি ছাদে বসে আছি।কেন জানিনা আজকে খুব ভাল লাগছে। কারন,আজকে আনিতার সাথে কথা বলব। ওকে নিয়ে মারিয়া ছাদে আসার কথা বলছে। আমি নিরবে ছাদের এককোনে দাড়িয়ে আছি এমন সময় মারিয়ার ডাক শুনে আমি পিছনে তাকাই। তাকাতেই আমি পুরো আশ্চর্য। এ কি এই মায়াপরীকে আমি এত কাছ থেকে দেখছি! আমার বিশ্বাসই হচ্ছেনা। আনিতা আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।
নিজের ভিতরে একটা ভয় কাজ করছে। ভয়টাকে চেপে রেখে আমি বললাম,-
> হায়,আমি তানিম।
> আমি আনিতা।
> কেমন আছেন?
> ভালো,আপনি?
> হুমম,ভাল। আসলে একটু ভয় ভয় লাগছে। মেয়েদের সাথে তেমন একটা কথা বলি না তো তাই আর কি....
> হুমমম,সেটা আপনার কথায়-ই বুঝতে পেরেছি।
> ওর কথায় কোনো বিরক্তির ছাপ না পেয়ে ভয়টা একটু কমে গেল।
তারপর ওর সাথে আরও কিছুক্ষন কথা বলি। ওর সাথে কথা বলার সময় একটা অচেনা টান অনুভূত হচ্ছিল। খুব ভাল লাগছিল।
তারপর থেকে ওর সাথে প্রায়ই ঘুরতে বের হতাম। আনিতাকে নিয়ে ঘুরতে খুব ভাল লাগতো। অবশেষে ঠিক করলাম আমার ভালবাসার কথা আনিতাকে জানানো খুব প্রয়োজন। আমি আর না বলে থাকতে পারছি না। রাতে রুমে বসে বসে ভাবছি কিভাবে আনিতাকে বলা যায়! আনিতা যদি রাগ করে তাহলে? যাইহোক আমাকে বলতেই হবে। অনেক ভাবনার পর আনিতাকে ফোন দিলাম।
আনিতা ফোনটা রিসিব করে যেই হ্যাঁলো বললো তখনই বুকটা কাঁপতে শুরু করলো।
নিজের ভয়টাকে চেঁপে রেখে প্রতিউত্তরে আমিও বললাম,-
> হ্যাঁ আনিতা, আসলে তোমার সাথে একটু কথা ছিল তাই ফোন দিয়েছি।
> হ্যাঁ বল!
> আসলে কথাটা কিভাবে বলবো বুঝতে পারছি না। তোমাকে বলাটা প্রয়োজন বলে ফোন দিয়েছি।
> হুমমম, বল তাহলে!
> একটু সাহস সঞ্চয় করে বললাম,দেখ আনিতা আমি কিন্তু ততটা খারাপ না যতটা বাহির থেকে মনে হয়। হ্যাঁ এটা ঠিক যে,আমি পড়ালেখায় একটু দুর্বল। তবে সবার মাথা তো এক না, তাই না....
> হ্যাঁ জানি তো। আচ্ছা তুমি এটা বলার জন্যই কি ফোন দিয়েছো?
> না মানে....
> কি মানে মানে করছো, যা বলার খুলে বল!
> হ্যাঁ সেটাই, আসলে আমি প্রথমবার যখন তোমাকে ছাদে দেখছিলাম তখন থেকেই তোমার প্রতি একটা ভাললাগা কাজ করছিল। তারপর যখন তোমাকে মারিয়ার সাথে দেখেছি তখন তোমার সাথে পরিচিত হতে খুব ইচ্ছে হচ্ছিল। পরিচয় হওয়ার পর এতদিন তোমার সাথে ঘুরে মনে হল আমি তোমাকে সত্যিই অনেক ভালবাসি। তাই আমি মনে করলাম তোমাকে জানানোটা খুব দরকার। আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি আনিতা!
কথাগুলো বলে এক দীর্ঘশ্বাষ ফেললাম।
আনিতা কোনো কথা বলছে না। কিছুক্ষন পর রাগী স্বরে বলল,-এখনই আমাদের ছাদে আসো।
> আমি একটু সাহস নিয়ে বললাম, এত রাতে আসলে মানুষ কি ভাববে!
> এবারে আরো রেগে বলল যে যা ভাবে ভাবুক, আমি বলছি এখনই আসবে তো এখনই আসবে।
তারপর আনিতা ফোনটা কেটে দিল।
অবশেষে আমি আনিতাদের ছাদে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি আনিতা একাকী দাড়িয়ে আছে। খুব বিষন্ন লাগছে আনিতাকে। আমি আবার কিছু ভুল বলে ফেললাম নাতো। আমি আনিতার পাশে গিয়ে দাড়ালাম। আনিতা নিশ্চুপ,কোনো কথা বলছে না। কিছুক্ষন পর আমার দিকে তাকালো,
এ কি! আনিতা কাঁন্না করছে।
> তুমি কাঁন্না করছো কেন? আমি কিছু ভুল বলে ফেললাম না তো!
> আচ্ছা তুমি আমাকে ভালবাসো সেটা আমার মারিয়ার মুখ থেকে আগে শুনতে হবে কেন?
> মানে.....!
> হ্যাঁ মারিয়া আগেই বলছিল তুমি আমাকে ভালবাসো।
> আমি মনে মনে ভাবলাম, আমি তো মারিয়াকে কখনও বলিনি যে আমি আনিতাকে ভালবাসি ,তাহলে! ধ্যাৎ....এগুলো আবার বলতে হয় নাকি। যেভাবে আমি ওকে বলছি পরিচয় করিয়ে দিতে তাতে তো যে কেউ বুঝবে এটা ভালবাসা। যাইহোক বোনটাকে মনে মনে অনেক ধন্যবাদ দিলাম।
> কি চুপ হয়ে আছো কেন?
> আচ্ছা তুমি যখন সব জানতেই তাহলে এরকম না জানার অভিনয়টা কেন করলে?
> আরে আমি দেখবো না এই ভিতুটা তার ভালবাসার কথা বলতে পারে কি না!
> আচ্ছা আমি যদি তোমাকে না বলতে পেরে অন্য কাউকে ভালবেসে ফেলতাম তাহলে?
> সাহসটা মনে হয় বেড়ে গেছে তাই না? অন্য কাউকে ভালবাসার আগে তোমাকে খুন করে ফেলতাম!
> তোমাকে একটু জড়িয়ে ধরতে পারি?
> প্রোপোজ করতে পারো নি এর আগেই জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হচ্ছে? মাড় খাবে....
> আচ্ছা তাহলে হাতটা একটু ধরি?
> বারন করেছে কে?
তারপর হাতটা ধরে ছাদের এক কোনে বসে পড়েছি। আনিতা আমার কাঁধে মাথা রেখে দূর দিগন্তে তাকিয়ে আছে। চাঁদের আলোয় আনিতাকে খুব সুন্দর লাগছে।
এভাবে বেশ ভালোই চলছিল আমাদের দিনগুলি। হঠাৎ আনিতা একদিন ফোন দিয়ে বলে,- আমাকে বিয়ে করতে পারবে? বাসার সবাই নাকি ওর বিয়ে দিতে চাইছে। এরমধ্যে অনেক ভাল ভাল জায়গা থেকে প্রস্তাব আসছে।
কথাটা শুনে আমি সম্পূর্ন নির্বাক হয়ে পড়লাম। তারপর আমি বললাম,- আমি এখনো ছাত্র আর আমি এখন তোমাকে কিভাবে বিয়ে করবো। আমি তোমাকে খাওয়াবো কি?
কথাটা শুনে আনিতা সাথে সাথে ফোনটা কেটে দেয়। তারপর আর ফোনে পাইনি। দেখা করার অনেক চেষ্টা করেছি কিন্তু ও করেনি। অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম।
আনিতার গিটারের আওয়াজ খুব পছন্দ। বিশেষ করে দুপুরে। দুপুরে নাকি গিটারের আওয়াজ অনেক মধুর শুনায়। তাই এখন ওর ভাললাগা গুলোকে নিয়ে কোনো রকম দিন চালাচ্ছি। আর সেজন্যই এই ভরদুপুরে গিটার বাজাচ্ছি। আজ ৩ মাস ১৭ দিন পর আনিতার সাথে দেখা হল তা আবার আমাকে তার বিয়ের কার্ড দিতে আসছে। মনে হচ্ছে ওকে গিয়ে একটা কসিয়ে থাপ্পর মাড়ি কিন্তু কোনো এক পিছুটানের জন্য সেটা সম্ভব হচ্ছে না। আনিতা চলে গেছে।
আমি আবার বেলকুনিতে গিয়ে গিটারে আওয়াজ তোলার চেষ্টা করছি। কিন্তু হচ্ছে না। চোখের কোন ঘেঁষে অশ্রু টুপটুপ করে গিটারের উপর পরছে। অতঃপর রুমে গিয়ে শুয়ে পরলাম। কিছু ভাল লাগছে না । রাতে আনিতার একটা ছবি নিয়ে ছাদে বসে আছি। আজকে কেন জানিনা আনিতার স্মৃতিগুলো বেশি কষ্ট দিচ্ছে। একটুপর ফোনের শব্দে চোখ মুছে স্ক্রীনের দিকে তাকাতেই দেখি আনিতা ফোন দিয়েছে। ফোনটা কেটে দিলাম। ও আবার ফোন দিয়েছে আমি আবার ফোনটা কেটে দিলাম।
তারপর ফোনটা সুইচ অফ করে রুমে চলে এসেছি।
পরেরদিন সকালে.....
ঘুমিয়ে আছি এমন সময় মাথার উপর পানি পরায় লাফ দিয়ে উঠে বসে পরেছি।
>এ কি আনিতা তুমি? এখানে কেন আর এই সকাল বেলা আমার মাথায় পানি ঢালছো কেন?
> কালকে রাতে ফোন ধরোনি কেন?
> ভাল লাগে নি তাই।
> ভাল লাগেনি মানে? আমি ফোন দিলাম আর তোমার ভাল লাগেনি?
> কেন ভাল লাগবে। আমার ভাল লাগায় তোমার কি আসে যায়! যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছো তার ভাল লাগলেই চলবে। তুমি সেখানে যাও।
> সেখানেই তো এসেছি।
> মানে....?
> কেন বিয়ের কার্ড পড় নি?
> না ছুড়ে ফেলে দিয়েছি।
> কি....?এখন কিন্তু সত্যিই মেড়ে ফেলবো।
তারপর মারিয়া এসে বিয়ের কার্ডটা আমার হাতে দিলো। তারপর আনিতা সেটা আমাকে পড়তে বলল....
কার্ডটার দিকে চোখ পড়তেই আমি পুরো অবাক! এ কি আমার সাথে আনিতার বিয়ে হচ্ছে। এই প্রথমবার নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছি না। আমি আনিতার দিকে তাকিয়ে বললাম,- এটা কি করে সম্ভব?
আনিতা আর মারিয়া দুজনেই হেসে দিয়েছে। তারপর সব ঘটনা আমাকে খুলে বলল। আনিতা আর মারিয়া মিলেই নাকি দুই পরিবারকে রাজি করেছে। এবারে নিজের বোনকে আর ধন্যবাদ না দিয়ে পারলাম না। এরকম বোন থাকলে
কোনো ভাইকেই ভালবাসা হারানোর যন্ত্রনা ভোগ করতে হবে না।
কিছুদিন পর....
আজকে আমাদের বিয়ে হয়েছে। আনিতা বিছানার উপরে বসে আছে। আমাকে দেখে বিছানা থেকে উঠে আমার সামনে দাড়ালো। আমার দিকে অভিমানী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমি বললাম,- এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
> তুমি আমাকে এত কষ্ট দেওয়ার জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।
> কেন আমি কি করেছি?
> সেদিন তুমি আমার ফোন ধরনি কেন তাই!
> ওওও,,,তা কি শাস্তি পেতে হবে বল!
> আমাকে জড়িয়ে ধর!
>কি...! এরকম শাস্তি তো আমি সব সময় নিতে প্রস্তুত।
তারপর আনিতাকে জড়িয়ে ধরি। আনিতাও আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। একটুপর আমি বললাম,- তোমাকেও একটা শাস্তি পেতে হবে। তুমি এতদিন আমার সাথে কথা বল নি তাই।
> কি শাস্তি?
> তোমার কপালে একটা চুমু দিবো।
আনিতা লজ্জা পেয়ে নিচের দিকে তাকিয়েছে। আমি ওর কপালে আলতো করে ভালবাসার স্পর্শ এঁকে দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরেছি।
.
( বিঃ দ্রঃ : ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। --- ধন্যবাদ)
.
Written by : Tanimul Islam Rabby --[ একাকী পথচারী ]

No comments

Powered by Blogger.