Header Ads

ভালবাসা রূপ

-ওয়ে হ্যালো এভাবে তাকিয়ে আছেন ক্যানো
-নাহ্ এমনি
-এমনি মানে,আজব
-আপনার নামকি অনামিকা
-হ্যা কিন্তু আপনি কি করে জানলেন
-হতেপারে আপনিও আমায় চেনেন
-আপনায় আমি প্রথম দেখছি,so চেনার প্রশ্নই ওঠেনা
-রিয়াদকে তো চেনেন
-মানে
-কাল বুঝবেন,এখন হসপিটালে যেতে হবে বাই
{মেয়েটা এখনো সেই আগের মতন আছে।
বয়সের সাথে শুধু সুন্দর্যটা বেড়েছে।
.
ফরিদপুর থেকে ওয়ান পাস করে আব্বু গ্রামের বাড়ি নিয়ে এসে টু-তে একটা কিন্টারগার্ডেনে ভর্তি করে দিলো।
ফুপ্পি সেই স্কুলের টিচার হওয়ার সুবাদে ক্লাসের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।
কিন্তু ধামাকাটা হলো যখন ক্লাসে দুই রূপবতী অনামিকা ও রিমঝিমের মাঝে বসিয়ে দিলো।
ভাগ্যক্রমে রোবট স্টাইলে বসে থাকতে বাধ্য হইলাম।
প্রথম ক্লাসের স্যার ঘন্টা শুনে বেড় হতেই এক লাফে পেছনের ব্রেঞ্চে গিয়ে বসে গেলাম।
কিন্তু মনটা পরে রইলো অনামিকার কাছেই।
তাই ব্যাগের ওপর মাথারেখে অনামিকার দিকে চেয়ে রইলাম।
টানা-টানা চোখ,চিকোন ঠোঁট,ফরশা গাল,সিল্কি সিল্কি চুল।সব মিলিয়ে একটা পিচ্চি পরী।
টিফিন টাইম।আফসুস পকেট এবং ব্যাগ পুরাই ফাকা।
তাই ব্যাগে মাথা রেখে অসহায়ের মতন চোখ বুজে রইলাম,এদিকে সবাই খাওয়ায় ব্যাস্ত}
-এই তোমার নাম কি
-[সুইট পিচ্চি ভয়েস,আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে উঠে বললাম]র..রিয়াদ
-ওই টিচার তুমার কি হন
-ফুপ্পি,ক্যানো
-আমায় প্রতিদিন প্রাইভেট পড়ায়
[কিছুক্ষণ নিরবতা।তারপর আবার অনামিকা আমায় অবাক করে এক অদ্ভুত বাক্য বললো]
-তুমি আমার সাথে বন্ধুত্ব করবা
-[অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে একটুপর উত্তর দিলাম]"ক্যানো নয়"
পরেরদিন.....
-রিমঝিম ওঠ(অনামিকা)
-ক্যানো(রিমঝিম)
-রিয়াদ এখানে বসবে(অনামিকা)
-প্লে থেকে আমরা দুজন একসাথে বসছি(রিমঝিম)
-এর জন্যই তোকে আর বসাবোনা(অনামিকা)
-বিকেলে প্রাইভেটে দেখা যাবে(রিমঝিম)
-বিকেলেরটা বিকেলে,এখন ওঠ(অনামিকা)
<আমি পেছনে বসে বসে শুধু অবাক হলাম।
তারপর অনামিকা পেছন ঘুরে বললো "রিয়াদ এখানে এসে বসো"।
১৩৯ রেঞ্জ বেগে চলতে থাকা হার্ট-বিট নিয়ে অনামিকার সাথে বসলাম।
প্রথম প্রথম কেমন লাগলেও পরে কনফিটিবল ফিল করতাম।
.
দেখতে দেখতে এক বছর কেটে গেলো।
আম্মু সেখান থেকে নিয়ে এসে থ্রি না পড়িয়েই প্রাইমারিতে ফোরে ভর্তি করে দিলো।
শেষ ক্লাসের দিন অনামিকা মন খারাপ করে শুধু একটা কথাই বলেছিলো"আমায় ভুলে যেওনা।এখন দূরে থাকলেও জিবনের শেষ সময়টা একসাথে থাকবো"।
কথাটা ভুলিনি।সেদিন কথা টা শুনে ভেবে ভেবে দীর্ঘ ৫বছর পর এর মানেটা বুঝতে পেরেছিলাম।
'কিন্তু তখন খুবি দেরী হয়ে গেছে'>
*
পরেরদিন বিকেলে অনামিকার জন্য দাঁড়িয়ে আছি।
অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর মেয়েটার দেখা পেলাম।
কিন্তু মেয়েটার হাঁটা দেখে মনে হলো আমার দিকেই আসছে।
তাই আমি একটু ভাব ধরতে অন্যদিকে হাঁটা দিলাম।
-এইযে শুনুন
-হ্যা বলেন
-কাল রিয়াদ নিয়ে কি যেন বলেছিলেন
-হুম[আকাশের দিকে তাকিয়ে]
-রিয়াদকে চেনেন আপনি
[আমার চেয়ে আর ভালো কে চেনে"মনে মনে বললাম"]
-হুম
-ওর সাথে একটু দেখা করিয়ে দিতে পারবেন
-আমার লাভ কি তাতে
-যা চাবেন তাই দিবো
-আচ্ছা,কাল আসবেন এই সময়ে
.
খুশিতে নাচতে নাচতে বাড়ি চলে আসলাম।
জানি মেয়েটা আজ সারা রাত রিয়াদ মানে আমিই তো "আমায় নিয়ে ভাববে"।
তাই পরেরদিন সারপ্রাইজ দিতে একটু বন্দবস্ত করলাম।
পরের দিন....
-রিয়াদ কোথায়
-আসছে
৫মিনিট পর আমার এক ফ্রেন্ড এলো "রাজিব"
ওকে আনার অবশ্য একটা কারণ আছে পুরো এলাকায় ও একমাত্র ব্যাক্তি যার চুলের সাথে আমার চুল সাপোর্ট খায়।
বাকি আর কিছুই ওর সাথে সাপোর্ট করেনা।
-রাজিব না...মানে রিয়াদ দোস্ত এই তোর অনামিকা(আমি)
-কেমন আছো(রাজিব)
-তুমি রিয়াদ (অনামিকা)
-তুমি আমায় ভুলে গেছো।গায়ের কালার একটু চেঞ্জ হইছে বলে চিনতে পারলানা(রাজিব)
-তেমন কিছু নয়।অনেক দিন পর দেখা হলোতো তাই(অনামিকা)
-হুম,তুমি কিন্তু বড় হয়ে আরো বেশী সুন্দরী হয়েছো(রাজিব)
-আপনি হা করে কি দেখছেন।একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ান[অনামিকা আমায় উদ্দেশ্য করে বললো]
অসহায়ের মতন দূরে দাঁড়িয়ে আছি।টানা ১০মিনিট কি কি যেন ফ্যাচ ফ্যাচ করে দুজন দুজনের হাত ধরতে গেলো।
আমারে আর আটকায় কেডা!চিতা বাঘের মতন দৌড়ে গিয়ে লাফ দিয়ে রাজিবকে সরিয়ে দিয়ে বললাম"দোস্ত এইটা কি করছিস"
.
-আপনার সমস্যা কি(অনামিকা)
[সমস্যা তো আমারি সবচেয়ে বেশী"মনে মনে]
-না মানে একটা কথা বলি(আমি)
-বলেন(অনামিকা)
-আমিই রিয়াদ (আমি)
-মানে(অনামিকা)[আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে]
-দোস্ত acting টা ক্যামন ছিলোরে(রাজিব)
-কি সব যাতা বলছো(অনামিকা)
-আসলে আমি রাজিব,এত্তক্ষন আমি রিয়াদের রোলটা করলাম(রাজিব)
-ঠাসসসসস[রাজিবের গালে পরলো]
-দোস্ত ব্যাথা পাসনাইতো(আমি)
-ঠাসসসসস[এইটা আমার গালেই]
-বুঝেছো ব্যাথে পেয়েছে কি না(অনামিকা)
-হুম(আমি)
-দোস্ত আমি গেলাম।গালে বরফ লাগাইগ্যা,নাইলে ফুলে যেতে পারে(রাজিব)
<বেচারা acting করে অস্কারের বদলে মাইর খেয়ে বাড়ি ফিরে গেলো>
-মিথ্যা বললা কেনো আমায়
-সারপ্রাইজ দিলাম
-রিয়াদ
-হুম
-অনেক গুলা প্রেম করো তাইনা
-কেউ একজন বলেছিলো তাকে যেনো না ভুলি,তাই তাঁর কথা ভেবে এই মনে শুধু তাঁরি ছবি এঁকে রেখেছি
-কে....
-আছে স্বপ্নের কোনো এক পরী
-আমায় বলা যায় না
-হুম,তাঁর কথা তাকে আর কি বলবো
-মানে
-সেইটা তুমিই
(এবার মুখে ১২০০ভোল্টের লাইট জ্বলে উঠলো।একটা হাসি দিয়ে রাস্তার মাঝেই জড়িয়ে ধরলো।
মানুষ কি ভাবছে খোদা জানে)
-অনামিকা সবাই দেখছে
-হুম,ফিল্মে তো অনেক দেখছে।এখন রিয়েলিটি তে দেখুক
.
ভাবতে পারিনি অনামিকাকে পাবো।
তবে দুটি মন একে অপরকে চাইলে শেষ মুহূর্তে তাদের মিল হবেই।
অনামিকা বাবা-মা_র একমাত্র মেয়ে।
ওর আব্বুকে আমার কথা জানানোর পর শ্বশুর মসাই কোনো আপত্তি করেন নি।
মেয়েকে আমার হাতেই তুলে দেয়।
*
"হ্যা ক্লাস ফাইভ পাস করার পর আমি রাজবাড়ী চলে যাই।
অনামিকা চলে যায় সিলেট"
তবু আজ দুজনের বাসরঘর
.
-রিয়াদ খুধা লাগছে
-পানি খাও
-ধ্যাত,চলো বাহির থেকে কিছু খেয়ে আসি
-না গেলে হয়না
-যাবো বলছি যাবোই,আমি শাড়ী চেঞ্জ করে আসছি
-আচ্ছা
(রাতের বেলায় রাস্তায় সম্ভবত পাহারাদার ছাড়া আর কেউই থাকেনা।
কিন্তু আজ তারো দেখা নেই।
আমার ভয়ে জান যায় আর অনামিকা "ওয়াও কত্ত adventureable"
তারপর ঘুরে ঘুরে একটা বাড়ির গাছ থেকে আম পেরে দিলাম আর মেয়েটা খেতে লাগলো।
আর এক বাড়ি থেকে পেয়েরা পেরে দিলাম।
"পেরে দিলাম বললে ভুল হবে,এটা অবশ্য চুরী নামেই আক্ষ্যাহিতো"
ম্যাডাম তো মহা খুশি।
অতঃপর বাড়ির দিকে যাওয়ার অনুমতি পেলাম।
বাড়ি এসেই দুজনে দিলাম এক লম্বা ঘুম।
এক ঘুমে কখন সকাল হইছে জানিইনা)
-এই ওঠো
-(.....)
কয়েকবার ডাক দিয়ে যখন কাজ হলোনা তখন জগে যা পানি আছে মুখে ঢেলে দিলো।
লাফ দিয়ে উঠে পরলাম।
-এইভাবে ওঠানোর কোনো মানে হয়
-ঘুমিয়ে হাসছিলা ক্যান,সত্যি করে বলো স্বপ্নে কার সাথে লুটুপুটু করছিলা
-কেউ আমারে মাইরালা
<ক্লাস টু_র বন্ধুত্ব,সেটা এক সময়
আর সেই ভালবাসা পাওয়া,সত্যি এটা একটা ভাগ্য।
"এমন ভাগ্য থাকলে লাস-ভিগাসের দিকে রওনা দিতাম">ই
ভালবাসা রূপ ধারণ করা,

No comments

Powered by Blogger.