Header Ads

এই ছেলে তুমি কে?এখানে কেনো?

এই ছেলে তুমি কে?এখানে কেনো?
এই রে নিশিদের বাড়ির বাগানের ওয়াল টপকাতে গিয়ে ধরা খেয়ে গেলাম!তাহলে কি আজ চুপি চুপি গিয়ে গোপনে নিশিকে দেখা হবে না!
-আমি হাসিব।আসলে বাবু আমি বাগান দেখতে এসেছি।দেখতে এসেছি কি কি ফুল আছে বাগানে!
-ও গার্লফ্রেন্ডের জন্য ফুল চুরি করতে এসেছো বুঝি!
ওরে বাবা!এটুকু মেয়ে কি ইঁচড়েপাকারে!
-না।আমার গার্লসফ্রেন্ড বলে গাছের ফুল গাছেই সুন্দর।
-ওহ তাহলে তোমার গার্লসফ্রেন্ড ঠিকই বলেছে!
-হুম।কিন্তু তুমি এতো রাতে বাগানে হাঁটতেছো কেনো?
-কেনো আবার আজ আমার বয়ফ্রেন্ড আসবে!
ওরে বাবা এইটুকু মেয়ের আবার বয়ফ্রেন্ড!না জানি হায় বড়টা তলে তলে কি কি করে ফেলছে!ওমাগো ভাবতেই কেমন জানি লাগছে!
-তোমার বয়ফ্রেন্ডও আছে?
-আমি কি সেটা বলেছি নাকি!
-তাহলে!
-কতো বোকা তুমি!আরে বোকা আপু বলেছে আজ আমার দাদুভাই আসবে আর দাদুভাই তো আমার বয়ফ্রেন্ড তাই না!
-ও আচ্ছা এবার বুঝেছি!
সত্যিই কি বোকা!
-ফুল দেখা হয়েছে এবার যাও।
-হুম যাচ্ছি কিন্তু তুমি ডিনার করেছো?
-হুম করেই এসেছি এখানে।
-তোমার আপু?
-এই তুমি তো ভারি বজ্জাত ছেলে।জানোনা আমার আপু এখন প্রাপ্ত বয়স্ক ওর কথা তুমি এভাবে এসে জিজ্ঞাস করছো কেনো?
-না মানে আমি তোমার আপুর ফ্রেন্ড।
-কিন্তু আপুর তো কোনো ছেলে ফ্রেন্ড নাই!
-আছে তুমি যাইয়া জিজ্ঞাস কইরো!
-বলেছে একটা বেষ্টফ্রেন্ড আছে।
-কি নাম?
-নাম... নাম...আরে হাসিবই তো!
-হুম।আমিই ওই হাসিব।
-তাহলে তুমি যদি আপুর বেষ্টফ্রেন্ড হও এভাবে চোরের মতো আসবে কেনো?সরাসরি আসলে আপু কি ভাগাইয়া দিতো নাকি?
-দিতেও পারে তোমার আপু যা জংলী না!
-কিহ!আমার আপুকে জংলী বলা!এই জন্যই মনে হয় ভাগাইয়া দেয় একদম ঠিক করেছে আপু বেশ করেছে।
-এই শুনো তোমার আপু আমাকে তাড়াইবো কি ওতো আমাকে এ বাসায় আসতেই দেখেনি কখনো!
-তাহলে আজ এসেছো কেনো?তাও আবার লুকিয়ে!
-আরে বাহ তোমার দুলাভাই তোমার আপুকে চুপিচুপি দেখলে এতে অন্যায়ের কি!
-তুমি দুলাভাই?দাঁড়াও আপুকে এক্ষুনি বলছি।আর যদি তাই হবে আপুকে তো সরাসরি দেখার কথা!আপু ওই আপু!
-ওই চেঁচাচ্ছ কেনো?আমি এসেছি তোমার আপুকে বলো না কেমন?তোমাকে কাল এতোগুলা কিটক্যাট দিয়ে যাবো!
-সত্যিতো?
-হুম সত্যি!
-কিন্তু তুমি যখন আপুর ফ্রেন্ডই হবে আপু জানলে প্রব্লেম কি?
-অনেক কিছু।এমন কি মেরে আমার নাকটাও ফাটিয়ে ফেলতে পারে!
-ওহ তাই আপু একবার বলেছিলো!
-কি বলেছিলো?
-ও একবার তোমার নাক ফাটাইয়া দিছিলো আর একবার চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলছিলো।তোমার মাথার কয়েকটা চুল আপুর ডায়েরিতে আছে।আপনি দাঁড়াও আমি দেখছি ডায়েরিটা আনতে পারি কি না!
-আচ্ছা বাবু যাও!
ওরে বাবা কোন মেয়ের পাল্লায় পড়লাম এতো পিচ্ছিটাও এতোটা ডেঞ্জারাস।আর যাই হোক এদের দুই বোনের পাল্লায় যারা পড়বে জীবন তেজপাতা করেই ছাড়বে!পিচ্ছিটা রুমে গেছে আমি এই ফাঁকে আবার কেটে পড়ি!
কি ভাবছেন?আমার কথা?আমার লাইফটা ও এইভাবে তেজপাতা করে দিবো?আরে ওটা অলরেডি প্রায় করেই দিয়েছে!
.
পরেরদিন কলেজে আসার পর!
-কিরে তুই কাল আমার বোনের সাথে কথা বললি কিন্তু আমার সাথে দেখা করলি না কেনো?
-আরে আমি আন্টিদের বাসায় গেছিলাম আর ফেরার সময় দেখি তোর বোন বাগানে হাটাহাটি করছিলো।
-ওই দেওয়ালের ভিতর দিয়া দেখা যাচ্ছিলো ওপাশে কে হাটাহাটি করছিলো?
-না মানে আমি কোনো ছোট কন্ঠের গান শুনে ওই দেয়ালটা টপকিয়ে দেখলাম কে গান গাইছে!
-ওই চুপ! আমার বোন গান না,ডান্স লাইক করে।
-ডান্স,ডান্স, আরে ডান্সই তো!মানে আমি দেওয়াল টপকিয়ে দেখেছিলাম ও একা একা নাচতেছিলো আর গাইতেছিলো!
-সত্যি তো?
-হুম সত্যি!
-আমি যদি বলি অন্য কারণ ছিলো!ওইসব আন্টির বাড়ি,নাচ-গান সব ঢপের!
-না।সত্যিই বলছি আর কোনো কারন ছিলো না!
-আমি না তোর ফ্রেন্ড আমার থেকে আসল কথাটা এভাবে লুকাইলি?
-না।তুই আমার ফ্রেন্ড না!
-তাহলে কি?
-কিছুনা!
-বলবি না?
-না!এখন যাতো এখান থেকে আমার গার্লসফ্রেন্ডের ফোন আসবে!
-চুপ!এই সব ঢপের কথা আমাকে বলবি না!আমি সব জানি!
-জানি মানে!কি জানিস?
-তুই রাতে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে যাস?
-কি বলছিস আমি কিছুই বুঝতে পারছি না!
-বুঝাচ্ছি!
হঠাৎ মোবাইলে ফোন বেজে উঠলো!
-এই আমি কি তোর জানেমনরে বদমাইশ?
-না,আসলে...
-তাহলে এই নাম সেইভ করছে কে তোর কন্টাকলিস্টে?
-এইটা সিউর আবিরের কাজ!
-চুপ!প্রতি রাতে আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে কি আবিরে বলে?
-না মানে...কিন্তু তুই!
-জানলাম কিভাবে তাইতো?
-হুম!
-সেদিন যখন তোর মোবাইলে আমাদের ফ্রেন্ডলি সেল্ফিগুলা লাভ ফ্রেমে বন্দি করে রাখতে দেখেছিলাম সেদিনই কিছুটা আচ করতে পেরেছিলাম।আর সেদিন একটা ফটোতে তোর পিঠে N ওয়ার্ডের একটা ট্যাটু দেখেছিলাম।আর একদিন রাতে চাঁদের আলোতে কারো ছায়া দেখলাম আর জানালার অপোজিটে আয়নায় লক্ষ্য করে বুঝলাম ওটা তুই ছিলি। আমি প্রতিদিনই এটা লক্ষ্য করতাম!কিন্তু দেখ তুই বন্ধুত্বে যা করছিস তা ঠিক নয়। 
-ঠিক না হলে এতোদিন তুই নিষেধ করিস নি কেনো?তুইতো সবই জানতি।
-আজ মনে হলো তাই বললাম।আর তুই এই জন্যই বন্ধুত্ব করেছিলি তাই না?
-হুম।আমি জানতাম তোর সাথে বন্ধুত্ব করা ছাড়া তোর কাছে আসা সম্ভব নয়।
-তাই বলে তুই আমার বন্ধুত্ত্বের সুযোগ নিলি?
-সরিরে এছাড়া আমার আর কোনো উপায় জানা ছিলো না!কিন্তু তুই সব জানতি আর জেনেও আমি যখন বন্ধুত্ত্বের জন্য জন্য হাত বাড়ালাম তখন এক্সেপ্ট করলি কেনো?তুই জানিস ভালোবাসার মানুষটি জীবনে অন্যতম একটা বেষ্টফ্রেন্ড হতে পারে!তোকে সত্যিই খুব ভালোবাসিরে নিশি! 
-আসলে একটা ছেলে যখন টানা তিনমাস একটা মেয়ের পিছু ঘুরে তখন তার উপর মায়া জন্মানোটাই স্বাভাবিক।
-তার মানে সামথিং সামথিং?
-নাথিং।কারণ তুই আগেই আমার বন্ধুত্ত্বের সুযোগ নিয়ে নিয়েছিস।
-আবার এক কথা তুইও পারলে সুযোগ নে!
-মানে কি! কিসের সুযোগ!
-কিসের আবার!আমার ভালোবাসার!
-উফফফ!তুই থামবি!এখন যা এখান থেকে,আমার বয়ফ্রেন্ড আসবে!
-কি!তুইনা বলতি তোর বয়ফ্রেন্ড নাই!
-ছিলনা তো!এই কয়েকদিন হলো আমারও বয়ফ্রেন্ড আছে!
-আচ্ছা থাক তুই বয়ফ্রেন্ড নিয়ে তোর সাথে আমার আর কোনো কথা নাই।আজ থেকে সব সম্পর্কের ইতি।তোর সাথে আড়ি আড়ি আড়ি!
-আড়ি হলে আবার আমার দিকে তাকিয়ে আছিস কেনো!ওইদিকে তাকা।
ওইদিকে তাকাতেই গালে অলতো চঞ্চুর স্পর্শন অনুভূতি!বুঝতে বাকি নেই এটাতো ভালোবাসারই স্পর্শন!
-তোর বয়ফ্রেন্ড!
-এই যে!
-কোথায়!
-যার গালে একটু আগে চুমু খেলাম,হাসিব্বা!বুদ্ধু একটা যেনো কিছুই বুঝে না!
-আরেকটা........
-পারবো না!দর্শক দেখছে তো বোকা!
-ও আচ্ছা তাও তো কথা!
-আর শুন ভাবিস না প্রপোজাল এক্সেপ্ট করেছি বলে সরাসরি কিংবা ফোনালাপ করবি।আগে যেভাবে প্রতিদিন লুকিয়ে দেখিস ঠিক সেভাবে এখনো লুকিয়ে লুকিয়ে দেখবি।এটা আমার খুব ভালো লাগে!
-আচ্ছা।
এইযে ভাই আমি কিন্তু অসভ্যতা করি নি!?আর আপনি যেটুকু দেখেছেন চেপে যান! 
.
লেখকঃ হাসিব শান্ত / বাবুর আব্বু
আইডিঃ Swopnil Songram (Suhamisib Shanto)

No comments

Powered by Blogger.