Header Ads

রুপন্তী

বুকের উপর ভারী কোন কিছুর চাপে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখি কেউ একজন আমার বুকের উপর শুয়ে আছে।
আমি কি স্বপ্ন দেখছি নাকি এটা বাস্তব? কে হতে পারে? ভূত নয় তো আবার!!! না না ভূত না পেত্নী হবে,,ভূত তো ছেলে হয়। কিন্তু যে আমার বুকের উপর শুয়ে আছে সেটা তো একটা মেয়ে।
মেয়ে বুঝতে পারছি এই কারণে যে তার লম্বা চুলে তার মুখটা ডাকা।
আমি ভালো করে চেয়ে দেখি রুপন্তী আমার বুকের উপর শুয়ে আছে। কিন্তু ও এখানে?
ওর তো এখানে থাকার কথা না।
এখানে কিভাবে আসলো?
আসছে যখন ভালোই হয়েছে। কি সন্দর করে আমার বুকের উপর মাথা রেখে ঘুমুচ্ছে,আমি একটুও নড়তে পারছি না,নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে আমার।
তবুও আমি নড়লাম না, ঘুমুচ্ছে ঘুমাক।
অনেকদিন হলো আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমায় নি মেয়েটি।
কিন্তু নাহ,আর পারছিলাম না,শেষমেশ কেশে উঠলাম, সাথে সাথে রুপন্তী জেগে উঠলো।
আমি শুয়ে থাকা অবস্থাতেই রুপন্তীর দিকে চেয়ে দেখি ওর চোখ দু'টো বেশ ফোলা আর লাল হয়ে আছে।
আমি শুয়া থেকে যেইনা উঠতে যাবো ঠিক তখনি রুপন্তী বলে উঠলো,
---খবরদার উঠবে না বলে দিলাম।উঠলে খবর আছে।
আমি আর উঠলাম না। আমি ওর দিকে চেয়ে দেখি ও কাঁদছে।
আমি বললাম,
---কি হলো কাঁদছো কেন??
কিছু বলছে না,শুধু আমার দিকে এক দৃষ্টিতে আছে। আমি আবারো বললাম,,
---কি হলো কাঁদছো কেন??
এবার রুপন্তী আমাকে আগের চেয়ে আরো জোরে আর শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
আমি কিছু বুঝতে পারছিলাম না তবে রুপন্তী যে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলো সেটা ঠিকই বুঝতে পারছিলাম।
আমি আর কিছু না বলে রুপন্তীকে জড়িয়ে ধরলাম।
যতক্ষণ না কান্না থামলো ততোক্ষণ জড়িয়ে ধরে রাখলাম।
কান্না থামলে ওকে বললাম,,
---কি হয়েছে কান্না করছো কেন?
এখনো কোন কথা বলছে না ও।
তাই আমি আবারো বললাম,কি হয়েছে বলবে তো? আর এইভাবে কান্না করছো কেন?
এবার রুপন্তী কথা বললো,
---আমাকে কষ্ট দিতে তোমার খুব ভালো লাগে তাইনা??
আমি,,আমি তোমাকে আবার কখন কষ্ট দিলাম?
---তোমার এতো জ্বর আমাকে বললে কি হতো??(রুপন্তী)
আমি এইবার সব বুঝতে পারলাম।
ও কেন এখানে এসেছে।
---কি হলো বলছো না কেন আমাকে কষ্ট দিতে তোমার খুব ভালো লাগে বুঝি?(রুপন্তী)
---জ্বর হয়েছে আমার আর তুমি কষ্ট পাবে কেন? (আমি)
---আমি কষ্ট পাবো না তো আর কে পাবে শুনি? পাশের বাসার ঐ মেয়েটা পাবে?(রুপন্তী)
আমি ওর কথা শুনে না হেসে পারলাম না,এখনো ও ঐ মেয়েটাকে নিয়েই পড়ে আছে।
মেয়েরা পারেও বটে!!!
আল্লাহ যে এদের মন কি দিয়ে তৈরী করছে উনিই সেটা ভালো বলতে পারবেন।
এর জন্যই তো আমি বলি,"মেয়েদের মন আর গিরগিটির রং দু'টোই সমান তলে চলে"
আর আমার এক বন্ধু বলেছিলো যে
" মেয়েদের মনে যদি একবার সন্দেহ ডুকে যায় তবে সেটা আর কোনদিন দূর হবে না,ভিমবার কিংবা সার্ফএক্সেল মারলেও না"
আমি রুপন্তী কে রাগানোর জন্য বললাম,
---তুমি কই কষ্ট পাচ্ছো,কষ্ট তো পাচ্ছি আমি,তোমার মতো একটা আটার বস্তাকে বুকে নিয়ে শুয়ে আছি।
কিন্তু একি!!! রুপন্তী না রেগে আরো নরম গলায় বললো,
---এখন তো আটার বস্তা আছি কয়েকদিন পরে যখন ধানের বস্তা হবো তখন কি করবে শুনি!!!
আমি ওর এমন উত্তরে অবাক না হয়ে পারলাম না,
কেননা এর আগে যখন প্রত্যেকবার'ই ওকে আটার বস্তা বলে ডেকেছি ও প্রত্যেকবার'ই আমাকে ছেড়ে দিয়ে গাল ফুলিয়ে বসে থাকতো।
আজ কি হলো ওর!!
---আটার বস্তা থেকে ধানের বস্তা মানে??(আমি)
---তুমি বুঝবে না..(রুপন্তী)
যখন হবো তখন দেখতেই পারবে..
আটার বস্তা থেকে ধানের বস্তা কিভাবে সম্ভব!!!
এই কথা যখন ভাবছি তখন রুপন্তী বলে উঠলো,,
---আমাকে কথা দাও আর কোনদিন আমাকে কষ্ট দিবে না?
জানি ওর সাথে তাল না মেলালে আমাকে ছাড়বে না তাই বললাম,
---আচ্ছা ঠিক আছে আর কষ্ট দিবো না।
এইবার রুপন্তী আমাকে ছেড়ে দিলো।
আসলেই খুব কান্না করেছে ও।
কেঁদে কেঁদে চোখ লাল করেছে তো করেছেই সাথে গাল টাও লাল করে ফেলেছে।
একটু আদর করা দরকার ওকে।
যেইনা আমি ওর গাল দু'টো কে ধরতে যাবো তখনি ও বলে উঠলো,
---এএএ আসছে আদর করতে,,যখন আদর করার সময় তখন করে না এখন অসুস্থ শরীর নিয়ে আদর করতে আসে।
---আমি এখন সম্পূর্ণ ভালো হয়ে গেছি।(আমি)
---কত যে ভালো হয়েছো সেটা আমার ভালো করেই জানা আছে।(রুপন্তী)
---বিশ্বাস হচ্ছে না?আমার কাছে এসে দেখো আমি ভালো হয়েছি কি না?(আমি)
---হু,,(মুখ বাঁকিয়ে)..আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি এই কথা বলে যখন রুপন্তী চলে যেতে লাগলো আমি তখনি ওর হাত টা ধরে এক টানে আমার মুখের কাছে ওর মুখ টা এনে বললাম,
"পৃথিবীর সব স্বামীর অসুখ অর্ধেক এমনিতেই ভালো হয়ে যায় যদি তার বউ তার পাশে থাকে"
কথাটি বলার পর চেয়ে দেখি রুপন্তী চোখ বন্ধ করে রেখেছে,চোখের পাতা দু'টো একটু করে নড়ছে আর ঠোঁট দু'টো কাঁপছে।
আমি ওর কপালে আলতো করে আমার ঠোঁট লাগালাম।
ঠোঁট টা লাগাতেই ও আমাকে পূর্বের দুই বারের চেয়ে আরো কঠিন ভাবে জড়িয়ে ধরলো।
"শিশুরা কোন কিছু দেখে ভয় পেলে যেমন করে কাউকে জড়িয়ে ধরে ঠিক তেমন করেই রুপন্তী আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে"
আমি ওর এমন ভাবে জড়িয়ে ধরতে দেখে বেশ অবাক ই হলাম।
আমি কিছুক্ষণ পর ওকে ছাড়াতে চাইলে ও আমাকে ছাড়তে চাইছিলো না।
তাই আমিও আর ছাড়ানোর বৃথা চেষ্টা না করে ওকে বললাম,
---ভয় পেয়েছো?
কথা বলছে না ও।
আমি আবারো বললাম,
---আরে আমার কিছুই হয়নি, এই সামান্য জ্বরে কেউ মরে না।
আমার মুখে মরার কথা শুনে রুপন্তী আমাকে ছেড়ে দিয়ে বেশ রাগী গলায় বললো,,
---আর একবার যদি মরার কথা মুখে এনেছো তবে আমিই তোমাকে এখনি আর এইখানেই গলা টিপে মেরে ফেলবো।
---আরে যার মরণ যেদিন আছে সেদিন তো সে মরবেই তাইনা?(আমি)
---আবার!!!(রুপন্তী)
বুঝলাম রুপন্তী বেশ রেগে গেছে, তাই ওকে আর না রাগিয়ে বললাম,
---আমার না খুব ক্ষুদা পেয়েছে।
রুপন্তী আমার দিকে রাগী একটা লুক দিয়ে বললো,
---আচ্ছা তুমি বসে থাকো আমি খাবার নিয়ে আসছি।
আমি বললাম,
---জ্বী হুকুম মহারাণী কটকটি... স্যরি স্যরি (মুখটা চেঁপে ধরে)
আসলেই তুমি একটা পাগল... এই বলে রুপন্তী আমার দিকে তার সেই মিস্টি হাসিটা হেসে খাবার আনতে চলে গেলো....

রুপন্তী তো খাবার আনতে গেলো আর আমি এখন বিছানায় একা একা বসে আছি।
কি করবো ভাবছি,,,ও হ্যা আপনাদের তো আমার বায়োডাটা মানে পরিচয়টাই তো দেওয়া হয়নি,,,রুপন্তী খাবার টা নিয়ে আসুক আর আমি ততক্ষণে আমার পরিচয় টা দিয়ে ফেলি।
আপনারা যারা আমার গল্প পড়েন তারা হয়তো ভালো করেই জানেন আমি কে তারপরেও আবারো বলছি, আমি ফিরোজ, বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে।
আমার ছোট একটি বোন আছে নাম তুলি,ও এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে।
আর আমি পড়াশুনা শেষ করে মোটামুটি চলে এইরকম একটা বেতনে জব করি।
অবশ্য বাবার সাথে তার ব্যবসা করতে বলেছিলো কিন্তু আমার ব্যবসা করতে ভালো লাগে না তাই এই জব করা।
যাইহোক পরিচয় পর্ব শেষ এখন আসি মূল কথায়,
মূল কথা বলতে রুপন্তী নিয়ে...
রুপন্তী হলো আমার বাবার বন্ধুর মেয়ে।
একদিন বাবা আমাকে বলে যে তার সাথে এক জায়গায় যেতে হবে কিন্তু সেই জায়গা টা যে রুপন্তীদের বাসা হবে আমি জানতাম না।
যখন গিয়েছি তখন তো পাত্রী দেখতেই হবে।
পাত্রীকে আনা হলো,আর আমার যানি কেমন কেমন লাগতে লাগলো।
আমার সামনে পাত্রী ইয়া লম্বা একটা ঘোমটা টেনে বসে আছে,ওর এই লম্বা ঘোমটা দেখে আমারই যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে।
অনেকক্ষণ পর "পাত্রীর ঘোমটা টা খুলা হলো সাথে যেন আমার চেঁপে ধরা গলাটাও ছেঁড়ে দেওয়া হলো।
আমি পাত্রীর দিকে একবার তাকিয়ে যেন আর চোখ নামাতে পারছিলাম না।
দেখতে আহামরি সুন্দরী না, তবুও কেন জানি আমি চোখ ফেরাতে পারছিলাম না।
পরে বুঝতে পেরেছিলাম কেন আমি চোখ ফেরাতে পারছিলাম না।
পাত্রী মানে রুপন্তীর মুখে এক বিশেষ ধরণের মায়া ছিলো,যা সব মেয়েদের মুখে থাকে না,
আর সেই মায়াটা'ই আমাকে তার দিক হতে চোখ ফেরাতে দেয়নি।
আমাকে আর রুপন্তীকে একসাথে কিছুক্ষণ কথা বলার জন্য রুপন্তীর রুমে পাঠানো হলো।
রুপন্তীর রুমে আসার পর সর্বপ্রথম কথাটি ছিলো,
---আমাকে কেন বিয়ে করছেন? আপনি আমার চেয়েও অনেক ভালো মেয়ে আশা করেন।
কথাটি বলেছিলো রুপন্তী।
আমি ওর এমন কথা শুনে অবাক না হয়ে পারছিলাম না কেননা এর আগে কোন মেয়ে এমন কথা বলেছে কি না সন্দেহ..
---এটা ঠিক আমি আপনার চেয়ে আরো অনেক ভালো মেয়ে পাবো কিন্তু.... একটুকুই বলে থেমে গিয়েছিলাম আমি।
---কিন্তু কি??
জবাবে আমি বলেছিলাম,
---আপনার মুখে আলাদা এক ধরণের মায়া আছে আমি দেখেছি যা সব মেয়ের মাঝে থাকে না,
আর সেই মায়ার আমি প্রেমে পড়ে গেছি, তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিয়ে আপনাকেই করবো এখন আপনি যদি রাজী থাকেন তবে,,আমার এমন উত্তর শুনার পর রুপন্তী আমার দিকে কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে ছিলো।
তারপর আস্তে করে বললো,
যদি তাকে তুমি করে ডাকি তবেই সে রাজী,বলেই সেই ভুবন ভুলানো হাসি দিয়ে রুপন্তী রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
হাসিটার সাথে আমার প্রাণটাও যেন নিয়ে চলে গেলো।
রুপন্তীর রুমে আমি একা ঠাঁই হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম, কি বলে গেলো একটু বুঝার চেষ্টা করছিলাম আমি। যখন বুঝতে পারলাম তখন আমার...(সব বলা যাবে না)।
রুপন্তীর হাসি টা এতোই মধুর ছিলো যে চোখ বন্ধ করলে এখনো সেই হাসিটা আমি দেখতে পাই।
তারপর পপারিবারিক ভাবেই আমাদের বিয়েটা সম্পূর্ণ হয়ে গেলো।
বাসর রাতে রুপন্তী আমার কাছে একটাই দাবী করেছিলো, আমি যেন তাকে কখনো ছেড়ে না যাই।
আমিও ওকে কথা দিয়েছিলাম,,আমি তোমাকে কখনো ছেড়ে যাবো না।
শরীর খারাপ লাগছে খুব? রুপন্তীর ডাকে বাস্তবে ফিরলাম। চেয়ে দেখি খাবার হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
---না...তবে হালকা মাথা ব্যাথা করছে(এমনি বললাম)।(আমি)
---আচ্ছা ঠিক আছে,,আগে খেয়ে নেও তারপর আমি তোমার মাথা টিপে দিবো দেখবে সব ব্যাথা দূর হয়ে গেছে।(রুপন্তী)
আমি তো এটাই চেয়েছিলাম মনে মনে।
কিন্তু মুখে বললাম,আচ্ছা ঠিক আছে।
রুপন্তী আমার পাশে বসে ভাতের সাথে তরকারী মাখাচ্ছে, আমি প্লেট নিতে চাইলে বলে আজ ও আমাকে খাইয়ে দিবে।
কিন্তু ভাত শুধু মাখিয়েই যাচ্ছে মাথা নিচু করে।
আমি হাত দিয়ে ওর মুখটা তুলে দেখি ওর চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে।
আমার খুব ভালো লাগলো ওর এই কান্না দেখে।
রুপন্তী যে আমাকে এতোটা ভালোবাসে কখনো বুঝতেই দেয় নি..
আমি ওর মুখ টা আমার দিকে তুলে বললাম,,
---আমি আমার এই পাগলী বউ টাকে আমার জীবনের চাইতেও অনেক বেশি ভালোবাসি। আমার কিছুই হয়নি। তুমিই তো আমার সব কিছু,তোমাকে ছেড়ে কি আমি কখনো যেতে পারি?
---তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসো না,,যদি ভালোই বাসতে তাহলে আমাকে একবার হলেও ফোন করে বলতে পারতে তোমার অসুখ...(অভিমানী কন্ঠে..রুপন্তী)
---তুমিই তো বলেছিলে যেন তোমাকে ফোন না করি।(আমি)
---আমি বললাম আর তুমি তাই করবে?
আজ যদি "মা" আমাকে না বলতো তাহলে কি হতো শুনি??(রাগী গলায়..রুপন্তী)
---কি আর হতো..আমি ম....আর কোন শব্দ করতে পারলাম না কারণ রুপন্তী আমার মুখে খাবার দিয়েছে।
রুপন্তী আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে আর বলছে,
---জ্বর কিভাবে বাঁধাইলে?
---বৃষ্টিতে ভিজে।(আমি)
---আর কোনদিন ভিজবে?(রুপন্তী)
---না..মাথা নাড়িয়ে।(আমি)
---কেন? ভিজবে না কেন?(রুপন্তী)
---জ্বর আসবে যে।(আমি)
---ভিজবে কিন্তু আমার সাথে।(রুপন্তী)
---জ্বর আসলে?(আমি)
---আমি আছি করতে শুনি?(রুপন্তী)
---আচ্ছা,,ঠিক আছে ভিজবো।(আমি)
---আর কোনদিন ঐ পাশের বাড়ির মেয়েটার সাথে কথা বলবে?(রুপন্তী)
---হ্যা...(আমি)
---কি!!!!!! (রুপন্তী)
রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে মনে হচ্ছে আমাকে এক্ষুণি ভাতের সাথে মাখিয়ে খাবে।
---না,না,না,আর কোনদিন বলবো না.. ভুল করে ভুল জায়গায় বলে ফেলেছি।(আমি)
---যদি দেখি আর কোনদিন কথা বলতে সেদিন দেখবে আমি কি করি...(রাগী গলায়..রুপন্তী)
---আর হবে না..(আমি)
---মনে থাকে যেন। (রুপন্তী)
---১০০ বার মনে থাকবে। (আমি)
রুপন্তী বিড়বিড় করে কি যেন বলতে লাগলো শুনতে পারলাম না।
কিন্তু আমার মন বলছে ও ঐ মেয়েটাকেই নিশ্চয় গালি দিচ্ছে,বলছে "তোর জন্যই আজকের এই অবস্থা,আমি যদি সেদিন চলে না যেতাম তাহলে আজ কে আর আমার স্বামীর অসুখ হয় না।
পাজি,বদ,বেহায়া,নিলজ্জ মেয়ে কোথাকার,ছেলে দেখলেই কথা বলতে ইচ্ছে করে,আর একদিন যদি দেখি আমার স্বামীর সাথে কথা বলতে তবে তোর একদিন কি আমার একদিন।।"
---কি হলো কি বলছো মনে মনে?(আমি)
---তোমার শুনে কাজ নেই..এই নেও হা করো?(রুপন্তী)
অতঃপর আমিও রুপন্তীর কথা মতো হা করলাম..
মনে মনে বলি যাক "পাশের বাড়ির মেয়েটা না থাকলে আমার কি যে হতো"
কি বুঝলেন নানা তো!!
বুঝিয়ে দিচ্ছি...
" ধরুন জ্বর টা যদি না হতো তবে রুপন্তী'র এই মিষ্টি ভালোবাসা পেতাম না।
আর ঐ পাশের বাড়ির মেয়েটা যদি না থাকতো তাহলে আমার ওর সাথে কথা বলা হতো না।
আর কথা না বললে রুপন্তী ওর বাবার বাসায় যেত না,
আর রুপন্তী না গেলে আমার আর বৃষ্টিতে ভিজা হতো না,
আর বৃষ্টিতে না ভিজলে আমার জ্বর আসতো না,
আর জ্বর না আসলে রুপন্তীর এই মিষ্টি ভালোবাসা পেতাম না।
তাহলে সব শেষে ফলাফল কি দাঁড়ালো!!!
এই সব কিছুর জন্য ঐ পাশের বাড়ির মেয়েটার ক্রেডিট।
তাহলে ওর তো আমার কাছ থেকে একটা ধন্যবাদ পাওনা রয়ে গেলো...
আগামীকালই তাকে তার প্রাপ্য জিনিস টা বুঝিয়ে দিবো এই কথা ভেবে যখনই রুপন্তীর দিকে তাকিয়েছি..
দেখি রুপন্তী আমার দিকে অগ্নিময় চোখে তাকিয়ে আছে...
আমি ওর এমন তাকানো দেখে একটা ঢোক গিলে মনে মনে বললাম....
ধন্যবাদ তো দূরের কথা আমি তো ঐ পাশের বাড়ির মেয়ের আর আশেপাশেই কোনদিন যাবো না ৷

No comments

Powered by Blogger.