Header Ads

হকার ছেলেটা

স্যার কাগজ
এখানে রেখে যা
জি স্যার এই এই যে আপনার কাগজ
খবরের কাগজটা দিয়েই ছেলেটা
হাটা দিলো ।
কিরে বস চা খেয়ে যা ?
নাহ্ স্যার কইছেন এইটাই বেশি ।
আমাগো মতো গরিবের কি
কোনহানে বইসা চা
খাওনের সময় আছে ?
কথাটা শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলাম ।
যদিও নিত্যসাধারন একটা কথা ।
কিন্তু ছেলেটা কথাগুলো
বলেছিলো এক অন্য আবেগে
আচ্ছা যা তাহলে ।
কাল আবার সময় মত আসিস কিন্তু ?
জি স্যার আসমু ।
আপনের কাগজ দিতে আমার কহনো
ভুল হয়না ।
চলে গেলো রতন নামের
নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের
দায়ভার বহন করা এক হতভাগা হকার
ছেলে ।
ছেলেটাকে নিয়ে এতবড় বর্ণনা
দেয়ার কারন হলো
ওর জিবন ।
গরীব মানুষদের জীবন এমনই হয় ।
আমিও গরীব ছিলাম ।
ভাগ্য আর নিজের উদ্যমে আজ
প্রতিষ্ঠিত ।
তাই আমিও গরিবের কষ্টটা বুঝি ।
ছেলেটাকে অনেক দিন ধরে
চিনি ।
সেই যখন আমি ভার্সিটিতে পড়ি
তখন থেকে ।
ছেলেটা অনেক ভালো সৎ ও বটে ।
রোযকার মতো চা খেয়েই
অফিসের পথে রওনা হলাম
সারাদিন কাজের শেষে
বাড়িতে ফিরলাম ।
টিভিটা অন করেই চোখে পরলো
একটা বিশেষ অনুষ্ঠান ।
নাম ছিলো
'হকারের জীবন'
খুব মনযোগ দিয়ে দেখলাম
অনুষ্ঠানটা ।
চোখের জল ধরে রাখতে পারলাম
না ।
ডায়েরি থেকে একটা নাম্বার
খুজে বের করলাম ।
সেই রতন নামের হকার ছেলেটার
নাম্বার ।
হ্যালো রতন
কে ?স্যার ?
কিরে কি করে চিনতে পারলি ?
সে যাউগ্গা ।
স্যার কিছু বলবেন ?
হ্যা তোকে একটা কথা বলার
ছিলো
স্যার এইভাবে বলে আমাকে ছোট
কইবেন না ।
আপনে আমার স্যার ।
আপনে আমারে যা খুশি বলেন ।
চাকরি করবি ?
কি যে কন স্যার ।
আমাগো কেডা চাকরি দিবো ?
আমি দিবো ।
তুই করবি কি না তাই বল ।
হ স্যার করমু তো ।
তাহলে কাল আমার অফিসে চলে
আয় ।
সকাল ৯ টায় ।
আচ্ছা স্যার আসমুনে ।
স্যার আপনেরে সালাম করতে মোন
চাইতাছে ।
আরে বোকা তেমন কিছুই হয়নি ।
কাল চলে আয় কেমন ?
ভালো থাকিস ।
ফোনটা কেটে দিয়ে শুয়ে পরলাম ।
খুব ক্লান্ত লাগছে ।
আজ অনেক ধকল গেছে ।
পরের দিন সকালে ছেলেটা আর
খবরের কাগজ নিয়ে
এলোনা
যাই হোক প্রতিদিনের মত সকালে
চা খেয়েই রওনা
হলাম ।
অফিসের খুব কাছাকাছি গাড়ি
চলে এসেছে
এমন সময় কোন এক পরিচিত কন্ঠ শুনতে
পেলাম
স্যার একটু দাড়ান
এ তো সেই হকার ছেলেটা
গাড়িটা একপাশে দাড় করালাম
যানজটপূর্ন রাস্তার মধ্য দিয়ে দৌড়
দিলো ছেলেটা
যেন আমার কাছে পৌছানোটা খুবই
জরুরী
ছেলেটা দৌড়ে আসছে আর আমি
তা চেয়ে চেয়ে
দেখছি
কিছুক্ষনের জন্য কেন যেন মনে হলো
সবকিছু স্লো মোশনে চলছে
সবই যেন হঠাৎ ধির গতির হয়ে গেছে
আর সেই স্লো মোশন গতিতে
ছেলেটা যেন অনেক সময়
নিয়ে একটু একটু করে আমার দিকে
এগোচ্ছে
জায়গাটা মাঝরাস্তা
এমন সময়
দুম ।
যেন একটা বিষ্ফোরন হলো
সবকিছু এখন পুরোপুরি থমকে গেছে
গাড়ি থেকে নেমে সামনে
এগিয়ে যেন পাথর হয়ে
গেলাম
নিথর একটা রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে
মাঝ রাস্তায়
প্রানটা তখনও আছে
আমার দিকে হাতটা বাড়িয়ে
দিতে চাইছে
আমিও হাতটা ধরতে যাবো কিন্তু
না এবার আর সেই
হাতে জোড় নেই
হাতটা আর আমার দিকে আসতে
চাইছে না ।
বুঝতে পারলাম না এত দ্রুত সব কি
হয়ে গেল
কিন্তু আমার কাছে মনে হচ্ছিলো
অনন্ত সময় নিয়ে
ঘটনাটা ঘটেছিলো
নিশ্পলক তাকিয়ে রইলাম সেই নিথর
দেহটার দিকে
একটা পরিবারের আশা আকাঙ্খা সব
এক নিমিষে
শেষ
রক্তাক্ত শরীর
পরে আছে সেই ছেলেটা
হকার ছেলেটা
এ এক নির্মম রোড এক্সিডেন্টের
কাহিনী

No comments

Powered by Blogger.